এরপর বিভক্তচিহ্নগুলো সরিয়ে দিচ্ছিলাম : :
অপ্রয়োজনীয় সেই হাতগুলো সরিয়ে নেওয়ার কথা ছিল, পারিনি। অনেক কথা ভেসে ওঠে মুগ্ধ তরঙ্গে ভাসতে ভাসতে। কত রকমের সীমানা ভাঙার কথা ভেবেছি যা দিয়ে জীবন তার নিজস্ব সঞ্জয় অপরাপর যে কোনো অনুষঙ্গে দৃঢ় প্রত্যয় জাগিয়ে তুলবে। অনেকটা পথ তার মধ্যে জীবন জীবিকার সন্ধ্যান। নিজের মতো করে নিজেকে ফিরে পাওয়ার আশায় কুলুকুলু ধ্বনি। সেই প্রত্ন সময়ের মেঘ যা মনের মধ্যে ঘুরে বেড়াত, প্রসন্ন সন্দিহান করে তুলত এখন তো সব ফাঁকা হয়ে গেছে। মাথার ভিতর দমবন্ধ ঠাসা ভিড়। কবিতা লিখতে লিখতে অনেকটা পথ অতিক্রম করে যে কোনো প্রান্তে চলে যাওয়ার আনন্দ যন্ত্রণার নির্নিমেষে অভিব্যক্তি । তখন কেউ হাতছানি দিয়ে ডাকত । তাদের পথ ধরে রাখার অন্তর্গত শৃঙ্খল । অতি সতর্কতা নিয়ে শব্দের সাথে শব্দের মেলবন্ধন । এ জাতীয় কাব্যযোগে কোনো নির্দিষ্ট বার্তা হয়তো দিতে পারিনি, তবু সময়কে সাক্ষী রেখে এক নির্ধারণ থেকে অন্য নির্ধারণে পৌঁছে দেওয়া । কারণ যন্ত্রণা যখন অনেকটা বিদ্ধ করছিল, ঘুরে দেখার মতো ছিল না কিছুই ।
এক শব্দ থেকে আর এক শব্দে শক্তি প্রয়োগ করতে করতে এ গমনের খেই তো ছিল না, উপরন্তু যা সন্নিবদ্ধ কাঁটার মধ্যে জ্বালাময়ী নিরাময় তার দুয়ারেই গচ্ছিত থাকা । বাঁশগাছে সন্ধ্যা নামত, জানালা দিয়ে যতটুকু দেখা যায়, সেই দেখার বাইরে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা। আশার জাগরণে অনাহুত মেঘেরা স্বপ্নবাজারের প্রতুল খুনসুটিতে। ব্যর্থতাকে ঢেকে রাখতাম এ জন্য যে সূর্য উঠবে একদিন , আলো ফুটবে। কোনো এক সময়ের জন্য নিরুদ্দেশ প্রলুব্ধ করবে। অথচ যা ভাবতাম তার অনেকটাই ছিল স্বপ্নের ঘোর। স্বপ্ন উদযাপনের মাঝে সেই সব লেখাগুলো মাথায় যখন হরেক কিসিমের ঝোঁক ।
এরপর বিভক্ত চিহ্নগুলোকে সরিয়ে দিচ্ছিলাম । এক পঙক্তি থেকে অন্য পঙক্তিতে যেতে যেতে প্রণালী গঠনের স্বাতন্ত্র্যে । নির্মোহ কোনো কিছু ছিল না । দূরে কিছুটা দূরে ব্যাকরণবিধি ব্যবচ্ছেদের পালিয়ে যাওয়ার অনুকল্প । বর্ষার ঝরো ঝরো বৃষ্টি ধারার মাঝে প্রজন্ম শিথিল করছিল তখন - বলা হচ্ছিল ফুরিয়ে যাওয়ার বাস্তবতায় কত না আনন্দ লুকিয়ে আছে । নিজেকে মিথ্যা লাগছিল । ঘন স্রোতের মতো জীবন তো চলে যাচ্ছে । প্রতিদিন পরিকল্পনার সুতো বেয়ে এ পাশ থেকে ও পাশ। অথচ স্বপ্নগুলো আমার ব্যর্থতাকে পরিণত করতে পারছিল না । আমি হয়ে উড়ছিলাম ।
আদর অযত্ন ক্ষোভ ক্রোধ - দার্শনিকের কিছু কিছু ঝলক তোমাতে নিবন্ধ । কবিতার থেকে বেরিয়ে আসছে না জীবন । আমিও কবিতাকেন্দ্রিকতার বিষন্ন মোহ ছেড়ে ছিটকে যাচ্ছি না , দূরে যতই কাকের শব্দ হঠকারিতার প্রলোভন দেখিয়ে উধাও হয়ে যায় । অথচ নাগরিক জীবনের উপর ছাপ ফেলতে কোথাও তো অবসর নেই । এমনই তীব্র সেই খুঁজে ফেরার ধ্বনি । আকাশের দিকে তাকিয়ে গাছের পাতা যখন নড়তে থাকে মনে হয় তাদের আরো কিছু বলার ছিল ।
শব্দের পিঠে শব্দ , যে কোনো শব্দ আমি বসাতেই পারি। যেমন মেঘ ; মেঘের পরে ফাল্গুন অথবা শ্রাবণ অথবা চৈত্রমাস । অথবা তীব্র আতঙ্কিত হয়ে বাঁচার কিছু শ্লোক, উদ্ভাবন থেকে অনেকটা দূরে । চলো হারিয়ে যাই । এই বাঁধার জীবন থেকে একটু আলগা হয়ে দেখি - -
ফাল্গুন তোমাকে অবরুদ্ধ করেছে
চৈত্রের হাতে কোনো সিগারেট নাই
এতক্ষণে বুঝি সময় হল দুয়ার খুলে চলে আসার ভিতরে ।
জিজ্ঞাসা চিহ্নের মাঝে দুটো বিড়াল চিৎকার করছিল । আমার সামনের ডানদিক দিয়ে, বাঁ হাতের রহস্য নিয়ে ছুটে যাচ্ছে লোকজন ।এত মানুষ প্রতিদিন কোথায় যায়, কতরকমের কাজ । এভাবে যদি নির্মাণ করতে না পারো , hangover তাকে ঝুলিয়ে দেবে কার্নিসে ।
সত্যি করে বলো মেঘ , তুমি চুরুট খেতে পারো কিনা । আমি তো নিরামিষ ভোজির দখলে । তবুও মন চায় । অন্ধকার কি এতটাই সেলাই করতে পারদর্শী যে জলের ট্যাঙ্কের উপর পায়রা বসলে , যে সাধন পটু হয়ে উঠছে না তাকে তুলে ধরবে উপরে । ফিকে হয়ে আসে । অক্সিজেন নিয়ে আমি আরও উপরে উঠে যাই - সদ্য ব্যান্ডনেম থেকে মুক্ত হওয়া যন্ত্রণার অধিকার বিন্দু কেমন যেন প্রাচীন হতে চাইছে ; আমি জ্ঞানশূন্য। সমস্যা দিয়ে আর কিছু হবে না , প্রতিটি লম্ব দূরত্বে কারা মোমবাতি জ্বালাচ্ছে , আবার নিভিয়ে দিচ্ছে ; না জানি ধারণ কি এতটাই নিরুপায় - তাকে চড় মারলেও, চড় ফিরিয়ে দিচ্ছে না ।
No comments:
Post a Comment